চট্টগ্রামে আদালত চত্বরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যার ঘটনার ৫২ সেকেন্ডের ভিডিও পুলিশের হাতে এসেছে। এই ভিডিও থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) তদন্ত-সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছে। পুলিশের উদ্ধার করা ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা একজন ব্যক্তি রাস্তায় পড়ে আছেন। আশপাশে ২৫-৩০ জন যুবক দাঁড়িয়ে রয়েছে। এদের মধ্যে এক যুবকের পরনে কমলা রঙের গেঞ্জি, কালো প্যান্ট এবং মাথায় ছাই রঙের হেলমেট। হেলমেটধারী যুবকটি হাতে থাকা কিরিচ দিয়ে পড়ে থাকা ব্যক্তিকে একের পর এক আঘাত করছেন। একই সঙ্গে আরও তিন-চারজন তাকে মারধর করছেন।
কর্মকর্তারা জানান, আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রনব। সাইফুলের নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে থাকলেও লাঠিসোঁটা দিয়ে পেটাতে থাকেন অন্যরা। ঘটনাস্থলে আরও ২৫-৩০ জন উপস্থিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে রমিত দাস, সুমিত দাস, গগন দাস, নয়ন দাস, বিশাল দাস, আমান দাস, মনু মেথর ও রাজীব ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বেশির ভাগই পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আর একজন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনার পর থেকে সেবক কলোনির অধিকাংশ বাসিন্দা ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে সেখানে কিছু মানুষকে দেখা যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনার সঙ্গে কয়েকজন জড়িত থাকলেও পুরো কলোনি বিপদে পড়েছে। তারা দাবি করেন, নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ বলেন, ‘পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারি ও ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। দায়িত্বে কারও গাফিলতি ছিল না।’
এর আগে, গত সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাকে চট্টগ্রামের আদালতে তোলা হয়। আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে পাঠানোর পথে তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে দেয় তার অনুসারীরা। তাদের সরিয়ে দিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণকে কারাগারে নেওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।